Header Ads

ঘুরে আসলাম বর্ষার অপরূপ সিলেট

ঈদের পরদিন রাতেই তিনদিনের জন্য সিলেট গিয়েছিলাম, বিশেষ করে হাওর এবং তার আশেপাশের দর্শনীয় এলাকা গুলো ঘুরে দেখার জন্য ।
দেখাদেখি এবং অভিজ্ঞতা, ভালো এবং মন্দ দুই্ই হয়েছে।
এই লেখার উদ্দেশ্য অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যারা পরবর্তীতে যেতে চান..
প্রথমদিন গিয়েছিলাম সিলেট শহর হয়ে ঘোরাপথে গোয়াইন ঘাট, পরে ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে বিছানাকান্দি আর ফেরার পথে পান্থুমাই ঝরণা।


আমরা ছিলাম ১১ জন তাই গোয়াইন ঘাট যাওয়ার জন্য সবচেয়ে কম খরচের মাধ্যম ছিলো লেগুনা, সকাল সন্ধ্যার লেগুনা ভাড়া ছিলো ৩৫০০ টাকা।
এবার অন্য কাহিনী, নৌকার মাঝি বিছানাকান্দি থেকে ফেরার পর পান্থুমাঈ যেতে রাজী না, আমাদের নাকি কথামত অন্য নৌকা নিয়ে যেতে হবে! মুখের উপর এ রকম মিথ্যাচার খারাপ লাগে। যাই হোক, আমরা যখন পান্থুমাঈ যাওয়ার জন্য অন্য নৌকা দরদাম করছিলাম এবার আগের মাঝি ৫০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়ায় যেতে রাজী!! কি আর করা, অতিরিক্ত ৫০০ টাকা সহ নৌকা ভাড়া দিলাম ২৬০০ টাকা...



তাই নৌকায় উঠার আগেই দরদাম করুন এবং পরিষ্কার গলায় বলুন আপনি কই কই যেতে চান, আনুমানিক কতক্ষণ থাকবেন আর নৌকার ভাড়া সর্বসাকুল্যে কত দিতে হবে। আর কোন অতিরিক্ত টাকা পরে চাইবে কিনা??
রাতে সিলেট শহরেই ছিলাম, হোটেল অনুরাগে।একটা এসি ডিলাক্স ডবল বেড, একটা নন এসি ডবল বেড আর সিঙ্গেল রুমের ভাড়া এই পিক আওয়ারে সর্বসাকুল্যে ৪৮০০ টাকা, মোটেই বেশী মনে হয় নি!

দ্বিতীয় দিন সুনামগন্জ পৌঁছে অনেক স্থানীয় লোকজনএবং গাড়ি চালকের সাথে কথা বলেছি এবং সবাই বলেছে বারিককার টিলা, শিমুল বাগান আর জাদুকটা নদী যাওয়ার সবচেয়ে ভালো পথ মটর সাইকেল!!



এবার আমি বলছি-যারা মটর সাইকেল করে দীর্ঘ পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে বারিক্কার টিলা, শিমুলবাগান এবং পরে জাদুকটা -এই পথ পরিহার করতে চান, সোজা তাহিরপুর নামার ঘাট চলে যান।
 মানুষ অনুযায়ী আগের মতই দরদাম, পরিষ্কার গলায় কই কই যেতে চান এবং সর্বসাকুল্যে কত টাকা দিবেন জানিয়ে নৌকা ভাড়া করুন। বলছি এই কারণে যে এখানে ও মাঝি নামক প্রতারক এবং দালালের খপ্পরে পরেছিলাম, সে ইতিহাস আর একদিন বলব!
প্রথমেই জাদুকটা নদী ধরে এগিয়ে নদীর পাড়েই শিমুল বাগান, শিমুল বাগান থেকে পাঁচমিনিটের পথ বারিক্কার টিলা!
আমরা ছবির বিশাল নৌকাটা ভাড়া নিয়েছিলাম।
মাঝি হাবলু ভাই খুবই ভালো মানুষ, আপনাকে সব ঘুরেঘুরে দেখাবে এমন কি যে যায়গাগুলিতে আপনি যাওয়ার পরিকল্পনাই করেন নাই!
দ্বিতীয়দিন ১২ টার দিকে ঘাটে পৌঁছালেও প্রতারক আর দালাল বাচিয়ে নৌকা জোগাড় করে যাত্রাই শুরু করেছিলাম ৪টায়!!
তারপর ও হাবলু ভাই এই অল্প সময়ে হাওর, শিমুল বাগান,বারিক্কার টিলা আর জাদুকটা নদী সবই নিজে ঘুরিয়ে দেখিয়ে এনেছিলেন! সন্ধ্যায় নদীতে আমাদের সে কি দাপাদাপি!


রাতে বোট ভিড়িয়েছিলাম হাওরের ধারে হাবলু ভাইয়ের গ্রামে, জয়পুর। আমাদের কেনা হাঁস, ডাল আর ভাত নিজেই রান্না করে দিয়েছিলেন উনার বাড়িতে।
পরদিন ও উনার বাড়িতে রান্না করা খিঁচুড়ি খেয়ে প্রথমে ওয়াচ টাওয়ার, পরে হাওরের কিছুটা ভিতরে ঘুরিয়ে এনে নীলাদ্রী হয়ে ট্যাকের ঘাট...
শুরুতে তিক্ত অভিজ্ঞতা হলেও দিনশেষে আমাদের প্রাপ্তি ছিল অসাধারণ !! আবারও বলছি, অসাধারণ ছিলো। আর আপনি ঘরে বসে কখনই এই অসাধারণত্বের স্বাদ বা দেখা পাবেন না ।
Courtesy : Nazrul Islam Arif

No comments

Powered by Blogger.